সারাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ
যাত্রাবিরতির দাবিতে রাজশাহীতে রেলপথ অবরোধ
প্রকাশ : ১১-০৬-২০২৫ ১১:৩৬

ছবি : সংগৃহীত
রাজশাহী ব্যুরো
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি (স্টপেজ) ও স্টেশন সংস্কারের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয়রা
বুধবার (১১ জুন) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে স্টেশনের দুই পাশে লাল নিশান দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন স্থানীয়রা। এরপর তারা সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এতে স্টেশনের কাছে রাজশাহী থেকে খুলনা অভিমুখে ছেড়ে আসা সাগরদাঁড়ি ট্রেন ও ঢাকাগামী মধুমতি, বনলতা, সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেন থেমে রয়েছে। ফলে সারাদেশের সঙ্গে রাজশাহীর ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে ঈদ শেষে ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে ফেরা মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। ট্রেনের সিডিউলের ব্যাপক বিপর্যয় হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
বিক্ষোভকারীরা স্টেশন সংস্কার ও আন্তঃনগর ট্রেন থামানোর দাবি-সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন তুলে ধরেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, নন্দনগাছি স্টেশনে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি দিতে হবে এবং স্টেশনের সংস্কার করতে হবে।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে সুমন নামে একজন বলেন, রেলওয়ে স্টেশনটি অনেক পুরোনো। ট্রেন থামবে বলে লাইন সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু লোকাল ট্রেন ছাড়া কোনো ট্রেন থামে না। এর আগে গত ১ মে স্টেশনে ট্রেন থামার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১ জুন থেকে ট্রেন থামানোর আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তারা কথা রাখেনি।
সাগরদাড়ি ট্রেনের যাত্রী সুজন আলী বলেন, ট্রেন নির্ধারিত সময় ছেড়েছিল রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে। এরপর নন্দনগাছি স্টেশনে এলাকায় এসে থেমে যায়। ট্রেন থেকে নিচে এসে দেখি, রেললাইনে একটি লাল পতাকা টানিয়ে অবরোধ করছেন এলাকাবাসী। এই অবরোধের ফলে দীর্ঘ এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ট্রেন থেমে আছে। এতে করে ট্রেনের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।
সাইফুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী বলেন, এই ট্রেন রাজশাহী-খুলনা রুটে চলাচল করে। ট্রেনের বেশিরভাগ যাত্রী চিকিৎসা কাজে রাজশাহীতে আসেন। বগিগুলোতে অনেক অসুস্থ যাত্রী এবং নারী, শিশুরা রয়েছে। তারা গরমে কষ্ট পাচ্ছে। আমাদের দাবি দ্রুত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি ব্যবস্থা নিক।
১৯২৯ সালে উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনটি স্থাপিত হয়। শতবর্ষী স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। বন্ধের আগে ১২ জন জনবল থাকলেও বর্তমানে শুধু পোর্টারম্যান পদে একজন কর্মরত আছেন। এখানে দুটি লোকাল ট্রেন থামে। পুরো স্টেশনের প্লাটফর্মে ছাউনি আছে। স্টপেজ না থাকলেও অনেক সময় ক্রসিংয়ের জন্য দাঁড়ায় ট্রেন।
সাগরদাঁড়ি ট্রেনের গার্ড মজিবুদ দৌল্লা বলেন, ট্রেন ছাড়ার আগে আন্দোলন নিয়ে কিছু জানা ছিল না। কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পশ্চিম রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক আহম্মদ হোসেন মাসুম বলেন, নন্দনগাছি রেলওয়ে স্টেশনের কাছে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ করছেন। তারা স্টপেজের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। এতে বেশ কিছু ট্রেন আটকা পড়েছে। বিক্ষোভ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত রাজশাহীর সঙ্গে রেলযোগাযোগ বন্ধ থাকবে।
এর আগে, গেল ১ মে আন্তঃনগর এক্সপ্রেসের স্টপেজের দাবিতে ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করেছে রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলার হাজারো মানুষ। এ সময় রাজশাহী ও চিলাহাটির মধ্যে চলাচল করা বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও লোকাল মেল ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। এতে কিছু সময়ের জন্য ট্রেনটি নন্দনগাছি স্টেশনে থেমে ছিল।
পাকশী জিআরপি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, একটি ট্রেন থেমে আছে স্টেশন এলাকায়। কোনো ধরনের অপ্রীতিকার ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা এখানে রয়েছি।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com