শিগগির রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু: ট্রাম্প

প্রকাশ : ২০-০৫-২০২৫ ১২:৪০

ছবি : সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন শিগগির যুদ্ধবিরতি এবং স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা শুরু করবে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দুই ঘণ্টার ফোনালাপ শেষে এই ঘোষণা দেন তিনি। খবর বিবিসির।

ট্রাম্প বলেন, শান্তি আলোচনার শর্তগুলো দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবে। তিনি আরো জানান, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দ্বিতীয় ফোনালাপে এই তথ্য জানিয়েছেন, যেখানে অন্যান্য বিশ্বনেতারাও যুক্ত ছিলেন।

পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর ট্রাম্প বলেন, দুজনের আলাপ চমৎকার হয়েছে। একটি যুদ্ধবিরতির জন্য শিগগির ইউক্রেন ও রাশিয়া আলোচনা শুরু করবে। আরো গুরুত্বপূর্ণ হলো তারা এই যুদ্ধে ইতি টানবে। জেলেনস্কি এই আলোচনাকে 'একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত' হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, এই আলোচনা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে দূরে না থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

তবে বাস্তবতা হলো, ট্রাম্প আশাবাদী হলেও এখনই যুদ্ধবিরতি বা শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। পুতিনের সঙ্গে আলাপ নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করলেও কবে বা কখন এই শান্তি আলোচনা শুরু হবে তা নিয়ে কোনো ইঙ্গিত দেননি ট্রাম্প। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টও মার্কিন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির দাবি নিয়ে কিছু বলেননি।

ট্রাম্পের সঙ্গে একান্ত ফোনালাপের পর জেলেনস্কি ইউক্রেনের পক্ষ থেকে ‘পরিপূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি’র প্রত্যাশার কথা বলেছেন। তিনি সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, যদি এই আলোচনায় মস্কো প্রস্তুত না থাকে তাহলে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

তিনি লেখেন, দুজনের আলাপ চমৎকার হয়েছে। একটি যুদ্ধবিরতির জন্য শিগগির ইউক্রেন ও রাশিয়া আলোচনা শুরু করবে। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো তারা এই যুদ্ধে ইতি টানবে। তিনি আরো জানান, এই তথ্য তিনি জেলেনস্কিকে দ্বিতীয় একটি ফোনালাপে জানিয়েছেন, যেখানে অন্যান্য বিশ্বনেতারাও যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা হবে। কারণ অন্য যে কারো চেয়ে এ আলোচনার বিষয়ে ভালো জানে তারা।

জেলেনস্কি অবশ্য বলেছেন, আলোচনা প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রতিনিধিদের যথাযথ পর্যায়ে যুক্ত থাকা অবশ্যই জরুরি। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আলোচনার বাইরে সরে যায়, তাহলে কেবল একজনই উপকৃত হবে তিনি হলেন পুতিন।

দিনের শেষে হোয়াইট হাউজে এক অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা থেকে সরে আসছে না। তবে তিনি নিজের মাথায় একটি লাল রেখা টেনে রেখেছেন যার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে কখন তিনি উভয় পক্ষকেই বলপ্রয়োগ করা বন্ধ করবেন। গত কয়েক সপ্তাহে ট্রাম্প একাধিক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, যদি মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার মধ্যস্থতা থেকে সরে আসবে।

রাশিয়ার অবস্থান কী হতে পারে- এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেছেন, পুতিন সম্ভবত যুদ্ধ নিয়ে ক্লান্ত এবং এর অবসান চান।অন্যদিকে পুতিন যখন ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপ করেন তখন তিনি সোচি শহরের একটি মিউজিকের স্কুলে ছিলেন। তখন তিনি এই ফোনালাপকে অত্যন্ত খোলামেলা ও গঠনমূলক হিসেবে আখ্যা দেন।

তিনি বলেন, আমরা মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একমত হয়েছি যে রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে একটি সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত। তিনি আরো জানান, দুই পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছালে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হতে পারে এবং একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে সঠিক পথে রয়েছে রাশিয়া।

রুশ প্রেসিডেন্টের সহকারী ইউরি উশাকভ বলেন, যুদ্ধবিরতির সময়সীমার বিষয়টি আলোচনায় আসেনি। যদিও ট্রাম্প অবশ্য এ বিষয়ে দ্রুত একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপের পর জেলেনস্কি দ্বিতীয়বার ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন।

পিপলসনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --

CONTACT

ads@peoplenewsbd.com

সর্বশেষ
জনপ্রিয়