শিল্পী আব্দুল আলীমের স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক চুরি
প্রকাশ : ২২-০৫-২০২৫ ১০:৪৩

শিল্পী আব্দুল আলীম, ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলা লোকসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী আব্দুল আলীমের স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদকসহ সাতটি মেডেল ও সম্মাননা স্মারক চুরি হয়েছে। গত ৮ মে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে মেজো মেয়ের বাসা থেকে এসব চুরি যায়। তারপর দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সেগুলো উদ্ধার হয়নি। পুলিশ বলছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন অন্তত পাঁচজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে ছবিতে তাদের মুখমণ্ডল ভালোভাবে বোঝা যায়নি।
প্রয়াত আব্দুল আলীমের মেজো মেয়ে আসিয়া আলীম খিলগাঁও সি ব্লকের পুনর্বাসন আবাসিক এলাকার তিনতলা বাড়ির নিচতলায় থাকেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি হাঁটতে বের হন। ৫০ মিনিট পর বাসায় ফিরে তিনি ঘরের দরজার তালা ভাঙা এবং সবকিছু এলোমেলো দেখতে পান। নিচতলায় অপর ইউনিটে তার ভাই (আব্দুল আলীমের মেজো ছেলে) সংগীতশিল্পী আজগর আলীম স্ত্রীসহ থাকেন। তিনতলা বাড়িটির ছয় ইউনিটে আব্দুল আলীমের পাঁচ সন্তান থাকেন। একটি ইউনিট ভাড়া দেওয়া রয়েছে।
আব্দুল আলীমের চুরি যাওয়া পদক-পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে ১৯৭৭ সালে পাওয়া একুশে পদক, ১৯৯৭ সালে পাওয়া স্বাধীনতা পুরস্কার, ১৯৬০ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে পাওয়া তমঘা-ই-হুসন এবং লাহোরের নিখিল পাকিস্তান সংগীত সম্মেলনে পাওয়া দুটি সম্মাননা স্মারকসহ সাতটি মেডেল। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণের একটি কানের দুল ও একটি গলার হার চুরি হয়েছে।
আব্দুল আলীমের বড় ছেলে সংগীতশিল্পী জহির আলীম বাড়িটির দোতলায় থাকেন। তিনি বলেন, বাসার পানি-গ্যাস বিলের প্রায় ১০ হাজার টাকা ছিল ওই কক্ষে, সেটি নেয়নি চোর। তবে পদক, স্বর্ণালংকার ও ৫০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। এ সময় তিনি চুরি হওয়া পদক উদ্ধারে সহায়তা চাইতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছেও যান। উপদেষ্টা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান বড় ছেলে।
পরিবার বা নিকটজনের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে কিনা- জানতে চাইলে আসিয়া আলীম বলেন, ভেতরের কেউ না কেউ নিশ্চয়ই আছে, তথ্য দিয়েছে। নইলে বাইরের লোক জানবে কীভাবে? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, টাকাপয়সা-গহনা নিয়েছে, তা নিয়ে আমার কষ্ট নেই। কিন্তু বাবার মহামূল্যবান জিনিসগুলো না পেলে সে কষ্ট সীমাহীন।
তদন্তের দায়িত্বে থাকা খিলগাঁও থানার এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, বাসায় ঢোকা-বের হওয়ার পথে সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। তবে আশপাশের ফুটেজ দেখে অন্তত পাঁচজনকে সন্দেহ করা হচ্ছে। আমরা তাদের চেহারা পেয়েছি।
খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাউদ হোসেন বলেন, মরমি কণ্ঠশিল্পীর পদক চুরির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি দল করে দেওয়া হয়েছে। তারা নিবিড় তদন্তে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা করছে।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com