পাকিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
প্রকাশ : ০২-০৬-২০২৫ ১২:১৭

ছবি : সংগৃহীত
ক্রীড়া ডেস্ক
পাকিস্তানের লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে রবিবার (১ জুন) সন্ধ্যায় বাজল শেষ বাঁশি, আর সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণ হলো পাকিস্তানের মধুর প্রতিশোধ। এক সময় যারা পাকিস্তানকে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে ফিরেছিল, সেই বাংলাদেশ এবার ফিরছে উল্টো গল্প নিয়ে— টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে লজ্জাজনক হারে।
মাঠে ছিল মোহাম্মদ হারিসের দানবীয় সেঞ্চুরি, তরুণদের ক্ষণিকের ঝলক, আর অভিজ্ঞতার ঘাটতিতে পর্যদুস্ত এক বাংলাদেশ। কোচ ফিল সিমন্স যদিও ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, তবে বাস্তবতা বলছে— এটি কেবল পরাজয় নয়, ভবিষ্যতের কাঠামো গড়ার পথে এক কঠিন বার্তা।
এদিন ব্যাটিং করে কাঙ্ক্ষিত পুঁজি পায়নি বাংলাদেশ। ব্যাটিং স্বর্গে বল যেভাবে এসেছে তাতে অনায়াসেই দুইশ ছাড়িয়ে আরো বড় পুঁজি পেতে পারতো টাইগাররা। উড়ন্ত সূচনাও এনে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও তানজিদ হাসান তামিম। কিন্তু পরের ব্যাটাররা এরপর আগ্রাসনের ধারা ধরে রাখতে পারেননি। ফলে ১৯৬ রানে সন্তুষ্ট থাকতে হয় টাইগারদের।
তবে বাংলাদেশের এই পুঁজিতে প্রয়োজন ছিলো শুরুতে পাকিস্তানের কিছু উইকেট তুলে নেওয়া। ব্যক্তিগত ১ রানে সাহিবজাদাকে ফিরিয়ে এমন কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল দলটি। কিন্তু হারিস নেমেই চিত্র পাল্টে দেন। তার খুনে ব্যাটিংয়েই শেষ হয়ে যায় টাইগারদের আশা।
তবে সুযোগ দিয়েছিলেন হারিস। রিশাদ হোসেনের বলে দুটি ছক্কা মারার পর ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু ঝাঁপিয়ে পড়লেও সেই ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। তখন তিনি ব্যাট করছিলেন ৩৭ রানে। সেই হারিস এরপর যোগ করেছেন আরো ৭০ রান।
আগের দুই ম্যাচে ০ ও ৪ রান করা সাইম অবশ্য এদিন শুরুতে কিছুটা ধুঁকেছেন। তবে ধীরে ধীরে নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে হারিসের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে তোলেন। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৩ বলে ৯২ রানের জুটি গড়েন তারা। ব্যক্তিগত ৪৫ রানে তানজিমের শিকার হন সাইম।
তবে হারিস শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে তুলে নিয়েছেন তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ৪৬ বলের ইনিংসটি সাজান ৮টি চার ও ৭টি ছক্কার সাহায্যে। এ ছাড়া হাসান নাওয়াজ ২৬ ও অধিনায়ক সালমান আলী আগা ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করেছিল বাংলাদেশ। এমনকি দুই ওপেনার যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন মনে হয়েছিল সহজেই দুইশ পেরিয়ে যাবে তারা। ১০.১ ওভারে আসে দলীয় শতরান। আর দেড়শ স্পর্শ করে ১৪.৫ ওভারেই। কিন্তু শেষ পাঁচ ওভারে তেমন আগ্রাসী হতে পারেনি টাইগাররা। ১৬তম ওভারে আব্বাস আফ্রিদি কেবল ছয়টি সিঙ্গেল দেওয়ার পর ১৮তম ওভারে এসে দুই রানের খরচায় দেন জোড়া ধাক্কা।
তবে সিরিজে প্রথমবারের মতো ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে দারুণভাবে তা কাজে লাগান দুই ওপেনার ইমন ও তানজিদ। গড়েন ১১০ রানের জুটি। যেখানে ইমন খেলেন ৬৬ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। ৩৪ বলের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায়।
কিছুটা দেখে খেলে তানজিদ করেন ৩২ বলে ৪২ রান। মারেন সমান দুটি করে চার ও ছক্কা। এরপর অধিনায়ক লিটন দাস ও তাওহিদ হৃদয় দুইজনই ১৮ বল মোকাবেলা করে করেন যথাক্রমে ২২ ও ২৫ রান। শেষ দিকে জাকের আলী ৯ বলে ১৫ রানের ক্যামিও খেলেন। পাকিস্তানের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন হাসান আলী ও আফ্রিদি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৯৬/৬ (পারভেজ ৬৬, তানজিদ ৪২, হৃদয় ২৫, লিটন ২২, জাকের ১৫*; আব্বাস ২/২৬, হাসান ২/৩৮, শাদাব ১/২৬, ফাহিম ১/৪১)।
পাকিস্তান: ১৭.২ ওভারে ১৯৭/২ (হারিস ১০৭*, সাইম ৪৫, নেওয়াজ ২৬, সালমান ১৫*; মিরাজ ২/২৬, তানজিম ১/৩৬)।
ফল: পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মোহাম্মদ হারিস। ম্যান অব দ্য সিরিজ: মোহাম্মদ হারিস। সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তান ৩–০ ব্যবধানে জয়ী।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com