ইংল্যান্ডের প্রথম মুসলিম ফুটবলার হচ্ছেন জেড স্পেন্স
প্রকাশ : ০৪-০৯-২০২৫ ১১:৪০

ছবি : সংগৃহীত
ক্রীড়া ডেস্ক
বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) অ্যান্ডোরার বিপক্ষে খেলতে নামবে ইংল্যান্ড ফুটবল দল। এরপর ১০ সেপ্টেম্বর তারা খেলতে যাবে সার্বিয়ায়। এই দুই ম্যাচের জন্য ইংল্যান্ড কোচ টমাস টুখেল যে স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন, সেখানে জায়গা পেয়েছেন টটেনহ্যাম হটস্পারের ফুল-ব্যাক জেড স্পেন্স।
তিনি ইতিহাসে `প্রথম প্রকাশ্য‘ মুসলিম ফুটবলার, যিনি ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি গায়ে তোলার অপেক্ষায়। ইএসপিএন। জেড স্পেন্স হচ্ছেন অভিনেত্রী কার্লা সিমোন স্পেন্সের ছোট ভাই। লন্ডনে জন্ম হলেও তার মা কেনিয়ান এবং বাবা হলেন জ্যামাইকান।
ইংল্যান্ড জাতীয় দলে ডাক পেয়ে ২৫ বছর বয়সী স্পেন্স যেমন অবাক হয়েছেন, তেমনি নিজেকে ইতিহাসের অংশ হতে দেখে গর্বিতও বোধ করছেন। কারণ ইংল্যান্ড কোচ টমাস টুখেলের সঙ্গে আগে তার কোনো কথাই হয়নি। স্পেন্স বলেন, `এটা এক আশীর্বাদ। অসাধারণ ব্যাপার। আমি সত্যিই অবাক হয়েছি যে, আমিই প্রথম মুসলিম খেলোয়াড় হতে চলেছি। এ এক অনন্য অনুভূতি।‘
ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলে প্রথম মুসলিম ফুটবলার, চাপ অনুভব করছেন কিনা? এমন প্রশ্নে স্পেন্স বলেন, `হয়তোবা, আবার হয়তো না। আমি কোনো চাপ অনুভব করি না। আমি শুধু মুখে হাসি নিয়ে ফুটবল খেলি এবং বাকি সবকিছু নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়।‘
স্পেনসের জীবনে ধর্মীয় বিশ্বাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, `প্রথমত, আল্লাহই সেরা। আমি প্রচুর প্রার্থনা করি এবং আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাই। জীবনের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তেও আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি যে আল্লাহ আমার পাশে আছেন। সুখের সময়েও আমি আল্লাহর নাম স্মরণ করি।‘
নটিংহ্যাম ফরেস্টের সঙ্গে প্লে-অফ জেতার পর টটেনহ্যামে যোগ দেওয়া তার জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। ক্লাবের তখনকার ম্যানেজার আন্তোনিও কন্তে তাকে প্রকাশ্যে `ক্লাব সাইনিং‘ বলে মন্তব্য করা, ধারাবাহিকভাবে ধারে অন্যক্লাবে খেলতে যাওয়ায় তার আত্মবিশ্বাস কিছুটা ভেঙে গিয়েছিল। তবে স্পেনস জানান, তিনি একজন যোদ্ধা এবং সবসময় লড়াই করে এগিয়ে যেতে চান। তার বিশ্বাস, `যখন আপনি নিজেকে বিশ্বাস করবেন এবং সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখবেন, সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে।‘
ধারাবাহিকভাবে ধারে বিভিন্ন ক্লাবে (রেনেঁ, লিডস এবং জেনোয়া) খেলার পর অবশেষে গত ডিসেম্বরে টটেনহ্যামের হয়ে তার অভিষেক হয়। এ মৌসুমেই তিনি দলের সঙ্গে ইউরোপা লিগের শিরোপাও জয় করেন, যা তার কঠোর পরিশ্রমের ফল।
স্পেনস মনে করেন, শীর্ষে পৌঁছানোর জন্য মানসিক শক্তি অপরিহার্য। টটেনহ্যামের হয়ে ইউরোপা লিগ জয় স্পেন্সের ক্যারিয়ারে বড় বাঁক এনে দিয়েছে। ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস ও কঠোর পরিশ্রমই যে সাফল্যের চাবিকাঠি— তা নিজের যাত্রায় প্রমাণ করেছেন তিনি।
তিনি তার এই লড়াইয়ের গল্প দিয়ে অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করতে চান। স্পেন্স আশা করেন, তার এই পথচলা শুধু মুসলিম নয়, সব ধর্ম-বর্ণের তরুণ ফুটবলারদের অনুপ্রাণিত করবে, `আমি যদি পারি, তবে আপনিও পারবেন। বিশ্বাস রাখুন, মনোযোগ দিন, সবই সম্ভব।‘
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com