ইসির বাজেট কমেছে এবার, কার্যকর নির্বাচন আয়োজন কতটা সম্ভব?
প্রকাশ : ০৩-০৬-২০২৫ ১৩:০১

ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
২০২৫-২৬ অর্থবছরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা। কিন্তু এটি আগের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অর্থবছরের তুলনায় অনেক কম। ফলে বাজেট ঘিরে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন, এই অর্থে নিরপেক্ষ ও কার্যকর নির্বাচন আয়োজন কতটা সম্ভব হবে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় নির্বাচন কমিশনের জন্য বাজেটে বরাদ্দ ছিল চার হাজার ১৯০ কোটি টাকা— এবারের চেয়ে এক হাজার ২৩৪ কোটি টাকা বেশি। ওই অর্থবছরে ইসির জন্য মূল বরাদ্দ ছিল দুই হাজার ৪০৬ কোটি টাকা; যা নির্বাচনী ব্যয়ের প্রেক্ষিতে পরবর্তী সময়ে বাড়ানো হয়েছিল।
অথচ বর্তমান বাজেটে, যেখানে আগামী ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে বরাদ্দ করা হয়েছে তুলনামূলকভাবে কম অর্থ।
নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ প্রসঙ্গে বলেন, সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ নির্বাচনে ব্যয় করা হবে। যদি আরো প্রয়োজন হয়, সরকার তা দেবে। সমস্যা হবে না। বাজেট একটি প্রস্তাব মাত্র। যদি নির্বাচন পরিচালনার জন্য অতিরিক্ত তহবিলের প্রয়োজন হয়, সেটি দেওয়া হবে। আর খরচ কম হলে অব্যবহৃত অর্থ ফেরত যাবে।
নির্বাচনী ব্যয়ের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনী খরচ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খরচ হয়েছিল মাত্র ২৮২ কোটি টাকা। সে সময় ১৫৩টি আসনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যয় হয় প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ নির্বাচনে ব্যয় দাঁড়ায় এক হাজার ৯২৭ কোটি টাকা; যা আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য বর্তমান বাজেট যথেষ্ট কিনা।
সোমবার সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হলো একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর।
তিনি বলেন, গত দেড় দশকে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাই আমরা নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের ওপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেছি এবং এ লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন, নীতিমালা ও আদেশ সংশোধন ও সংস্কারের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, যদি সরকার আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্তে অটল থাকে, তবে বাজেটে সংশোধন আনার প্রয়োজন হতে পারে। এই মুহূর্তে বাজেটের যে কাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছে, তা কার্যকর ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার জন্য যথেষ্ট হবে কিনা, সে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরাও।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com