নারীকে ধর্ষণ ও ভিডিওধারণ
এবার মামলা চালাতে চান কুমিল্লার সেই নারী
প্রকাশ : ০১-০৭-২০২৫ ১৩:২০

ছবি : সংগৃহীত
কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণকাণ্ডে আলোচিত সেই নারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন। এবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন তিনি। এর আগে শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে মামলা তুলে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ওই ভুক্তভোগী।
পরিবারের সিদ্ধান্তে মামলা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন ওই নারী। মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে ভুক্তভোগী নিজেই তার এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, আমাকে স্থানীয় আবুল কালাম ও মুকুল মামলা তুলে নিতে বলেছিলেন। তারা জানান, মামলা না তুললে আসামিরা জামিনে বের হলে আমার বাড়ি থাকা অসম্ভব হয়ে উঠবে। আমি ভীত হয়ে মামলাটি তুলে নেওয়ার কথা বলেছিলাম, কিন্তু এখন বুঝেছি আমাকে ভুল বোঝানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমি চাই, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, তার স্বামী দুবাই প্রবাসী। তিনি তাকে বলেছেন, সম্মান তো চলেই গেছে এখন মামলা করলে কি সেই সম্মান ফিরে আসবে? আসবে না।
ওই নারী বলেন, ‘মামলা করছিলাম ভালার লাইগা। অহন জামাইয়ে না করে। মামলাটা যখন করছি জামাই আমার লগে রাগারাগি কইরা কথা বলে নাই। গেরামের লগেও বুঝতে পারি নাই। স্বামী এইসব শুইনা, দেইখা অহন ফোনই দেয় না।’
মুরাদনগর থানায় ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে হওয়া দুটি মামলারই বাদী ভুক্তভোগী। ধর্ষণ মামলায় একমাত্র এজাহারনামীয় আসামি ফজর আলী গ্রেপ্তার হয়েছেন। অন্যদিকে পর্নোগ্রাফি মামলার এজাহারনামীয় চার আসামিও গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে এ মামলার অজ্ঞাতনামা আরো ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুরাদনগর থানার এসআই রুহুল আমীন বলেন, ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলে মামলার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় আসামিদের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আদালত শুনানি শেষে তা মঞ্জুর করলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হবে। ঘটনায় আর কেউ জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। মামলা তদন্তে রিমান্ড প্রয়োজন। কারা, কেন, কী উদ্দেশে ঘটনা, ভিডিওধারণ ও তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে জিজ্ঞাসাবাদে সব বেরিয়ে আসবে।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ভিকটিম মামলা করেছেন। আমরা তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
বর্তমানে ধর্ষণ মামলার আসামি ফজর আলী আহতাবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে আদালতকে রবিবারই লিখিতভাবে জানিয়েছে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে আসামিকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিজনার্স সেলে (হাসপাতালে) রাখা হয়েছে।
গত ২৭ জুন রাতে কুমিল্লার মুরাদনগরের বাহেরচরে ঘরে ঢুকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার ভিডিও ধারণ করে পরে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়; যা ২৯ জুন ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনায় ধর্ষিত নারী ২৮ জুন শুক্রবার রাতে প্রধান অভিযুক্ত ফজর আলীকে আসামি করে ধর্ষণের মামলা করেন।
এরপর শনিবার (২৯ জুন) ফজরসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকি চারজন মো. আলী সুমন, রমজান, আরিফ ও অনিক ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। তাদের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে চারজনকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com