চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে অচলাবস্থা, বিপাকে সেবাপ্রত্যাশীরা
প্রকাশ : ০২-০৬-২০২৫ ১২:২৮

ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে আজ সোমবার (২ জুন) পর্যন্ত ছয় দিন ধরে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো রোগী ও তাদের সঙ্গে আসা স্বজনরা। হাসপাতালের প্রধান দুটি গেট তালাবদ্ধ থাকায় রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন, আর ভেতরে অবস্থান করছেন পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।
গত ২৮ মে চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের কর্মচারী ও চিকিৎসাধীন জুলাই আন্দোলনে আহতদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর হাসপাতালে জরুরিসহ সকল ধরনের চিকিৎসা ও অপারেশন বন্ধ হয়েছে। ওই দিন ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আতঙ্কে চিকিৎসাধীন ও আগত রোগীরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। এই মারামারির ঘটনায় উভয়পক্ষের লোকজন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। তবে ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীসহ ১৫-২০ আহত হন। জুলাই আন্দোলনে চিকিৎসাধীন ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা না হলে তারা কাজে যোগদান করবেন না বলে জানান।
রবিবার (১ জুন) দুপুরে সাতক্ষীরার তালা উপজেলা থেকে তাহমিনা খাতুন (৩৫) নামে এক রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। এক আনসার সদস্য তাকে জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা বন্ধ। অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
ওই রোগী বলেন, এতদূর থেকে আসলাম এবং ডাক্তার বলছে ঢাকার এই হাসপাতালে গেলে চোখের ভালো চিকিৎসা হবে। এ কারণে আসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি এখন কোথায় থাকব। অন্য হাসপাতালে গিয়ে আমার পক্ষে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব না।’
তাহমিনার মতো বিপুলসংখ্যক রোগী চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে এসে বিনা চিকিৎসায় ফিরে যাচ্ছেন। বিষয়টি নিরসন করা জরুরি বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মনে করেন। হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বলেন, জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় আহত ৫৫ জন এবং মহিলাসহ ২০-২৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সমস্যার সমাধানে চেষ্টা চলছে বলে জানান এক কর্মকর্তা।
এর আগে শনিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, চিকিৎসাসেবার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত হলেই হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসা সেবা পুনরায় চালু করার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে চক্ষু চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এমন রোগীদের নিকটস্থ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে চিকিৎসাসেবা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট দেশের অন্যতম বৃহৎ চক্ষু বিশেষায়িত হাসপাতাল। এখানে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় এই বিপুলসংখ্যক রোগীকে এখন অন্য হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে, যেখানে হয়তো প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ বা সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে দেশের সাধারণ চক্ষু রোগীদের জন্য এটি একটি ভয়াবহ সংকটে পরিণত হয়েছে।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com