তিন দফা দাবিতে আজ থেকে কর্মবিরতিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা
প্রকাশ : ১৩-১০-২০২৫ ১১:৪২
ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
তিন দফা দাবি আদায়ে আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) থেকে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। রবিবার (১২ অক্টোবর) রাতভর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করে তারা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
দীর্ঘ দিনের দাবি আদায়ে রবিবার সকালে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
এর প্রতিবাদে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হন। বাড়ি ভাড়া হিসেবে মূল বেতনের ২০ শতাংশ ভাতাসহ তিন দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষকরা দাবি আদায়ে খোলা আকাশের নিচে শহীদ মিনারে রাত কাটান। পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আজ থেকে পূর্ণ কর্মবিরতির ঘোষণাও দেন তারা।
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নেতা দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, শিক্ষকদের লাঠিপেটা করা হয়েছে। শিক্ষকরা অনেক উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন। তাই এ কর্মসূচি এগিয়ে আনা হয়েছে। সোমবার থেকেই সারা দেশে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। যতক্ষণ দাবি আদায় না হবে, দেশের এমপিওভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম চলবে না।
তিনি জানান, বেসরকারি মাদ্রাসায় ন্যূনতম নয় হাজার ৩০০ ও বেসরকারি স্কুলে ন্যূনতম ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতনে শিক্ষকরা চাকরি করছেন।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা ছাড়াও চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার দাবি আন্দোলনকারীদের।
এদিকে দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশ আন্দোলনরত শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে এবং মুহুর্মুহু সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও জলকামান ব্যবহার করে। পুলিশের লাঠিচার্জে পিরোজপুর থেকে আসা শিক্ষক গণপতি হাওলাদার (৩২), কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর মো. শফিকুল ইসলাম কাজল (৪০) এবং চাঁদপুরের আক্কাস আলী (৫৫) গুরুতর আহত হন। তাদের মাথা, পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সহকর্মীরা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, আহত তিন শিক্ষককে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা হাসপাতাল ছেড়েছেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার; তবে গত ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা প্রকাশ্যে এলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।
এরপর গত ৬ অক্টোবর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শাতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com