নতুন দল নিবন্ধন আবেদনের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু
প্রকাশ : ০৯-০৭-২০২৫ ১১:৫১

ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদনপত্রগুলো যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রক্রিয়ার জন্য ইসি একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে।
কমিটির সদস্যরা প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাইয়ে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি বা কাগজপত্রের ঘাটতি থাকলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোর কাছে সেগুলো পূরণের জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি একটি সময়সীমাবদ্ধ সুযোগ, যাতে আবেদনকারীরা প্রয়োজনীয় তথ্য ঠিক করতে পারে এবং যেকোনো ভুল সংশোধন করা সম্ভব হয়।
এই যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার পর, যাচাইয়ের মাধ্যমে টিকে থাকা দলগুলোর গঠনতন্ত্র পর্যালোচনা করা হবে। সেইসঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের অফিসের নথিপত্র, নিবন্ধনের শর্তাদি ও অন্যান্য দলিলের সঠিকতা যাচাই করার জন্য প্রয়োজনীয় তদন্ত চালানো হবে। এ ক্ষেত্রে ইসি কর্মকর্তারা দলগুলোর বিভিন্ন দিকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করবেন এবং বিষয়টি আরো সুস্পষ্টভাবে মূল্যায়ন করবেন।
নতুন নিবন্ধনের জন্য মোট ১৪৭টি আবেদন জমা পড়েছে, তবে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার শর্ত অনুযায়ী ১৪৪টি দল আবেদন করেছিল। তিনটি দল একাধিক আবেদন জমা দিয়েছে এবং আবেদন গ্রহণের শেষ সময় ছিল ২২ জুন। আবেদনগুলোর মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে ছোটখাটো ভুল বা কাগজপত্রের অসম্পূর্ণতা থাকতে পারে, যা ঠিক করতে আবেদনকারীদের ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে। এই সময়ে তাদের যে কোনো ভুল সংশোধন করতে হবে।
নিবন্ধন আবেদনপত্রের মধ্যে কিছু মৌলিক কাগজপত্র জমা দিতে হয়, যেমন দলের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনী ইশতেহার (যদি থাকে), দলীয় বিধিমালা (যদি থাকে), দলীয় লোগো, দলীয় পতাকা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের নামের তালিকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য, তহবিলের উৎস এবং নিবন্ধন ফি পরিশোধের কপি। এ ছাড়া দলের প্রধান শর্তগুলোর মধ্যে একটি হলো, দলটির একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতে হবে এবং দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি গঠন করতে হবে। এর পাশাপাশি, প্রতিটি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন থানায় ২০০ জন ভোটারের সমর্থন পেতে হবে।
প্রক্রিয়া শেষে, যেসব দল বাছাইয়ের মাধ্যমে টিকে যাবে, তাদের মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন যাচাই করা হবে। নির্বাচন কমিশন এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নির্ধারণ করবে, ওই দলগুলো নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করেছে কিনা। এরপর, যদি কোনো দল নিয়ে আপত্তি থাকে, তবে তা নিষ্পত্তি করার জন্য শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শুনানি শেষে, কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে যে, ওই দল নিবন্ধন পাবে কিনা।
শেষ পর্যন্ত, কোনো দল আবেদন পর্যালোচনায় প্রাথমিক শর্তগুলো পূরণ করলে এবং কোনো আপত্তি না থাকলে, তারা নিবন্ধন সনদ পাবে। তবে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এর আগে প্রায় ৮১টি দলের আবেদন বাতিল হয়েছিল, এবং শুধুমাত্র দুটি দল নিবন্ধন পেয়েছিল। বর্তমানে, নির্বাচন কমিশনের কাছে মোট ৫০টি নিবন্ধিত দল রয়েছে, যেগুলো আগামী নির্বাচনে তাদের দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, প্রাথমিকভাবে তথ্য চেয়ে দলগুলোকে আমরা একটা সময় দেব, এ সংক্রান্ত চিঠিও দেওয়া হবে। চিঠি দেওয়ার দিন থেকে ১৫ দিন সময় পাবে; নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ত্রুটি সংশোধন করতে পারবে। নির্ধারিত সময়ে তথ্য দিতে না পারলে ও বাছাইয়ে প্রাথমিক শর্ত পূরণ না করল বা সঠিক তথ্য না থাকলে আবেদন বাদ পড়ে যাবে। তিনি জানান, এরপর তথ্য সঠিক আছে কিনা যাচাই করা হবে, তদন্ত হবে। সব শর্ত ঠিকঠাক পূরণ হলে যোগ্য দল নিবন্ধন পাবে।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com