নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র হলেন জোহরান মামদানি
প্রকাশ : ০৫-১১-২০২৫ ১১:০০
ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির ১১১তম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অঙ্গরাজ্যটির সাবেক গভর্নর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমো এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করে ইতিহাস গড়লেন তিনি। এ জয়ের মধ্য দিয়ে মামদানি হলেন শহরটির প্রথম মুসলিম মেয়র। তিনি কয়েক প্রজন্মের মধ্যে নির্বাচিত সবচেয়ে তরুণ মেয়রও বটে।
সিটির বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য লড়াই করছিলেন। তবে গত সেপ্টেম্বরে নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
নির্বাচনে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় আজ বুধবার ভোর ৫টা) আনুমানিক ১৭ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছে শহরের নির্বাচন বোর্ড। গত ৩০ বছরের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি।
১৯৯৩ সালের নির্বাচনে প্রায় ১৯ লাখ ভোটার ভোট দিয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী রুডি জুলিয়ানি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ডেভিড ডিনকিনসকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এবারের নির্বাচনে প্রায় সাত লাখ ৩৫ হাজার ৩১৭ জন আগাম ভোট দিয়েছেন, যা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো নির্বাচনে নিউইয়র্ক শহরে এটিই সর্বোচ্চ আগাম ভোট পড়ার ঘটনা।
নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৬টায়। শেষ হয় রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় আজ বুধবার সকাল ৮টা)। এর পরপরই শুরু হয় ভোট গণনা।
শহরের অ্যাস্টোরিয়া এলাকায় একটি কেন্দ্রে ভোট দেন ৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি। এবারের নির্বাচনে জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর অঙ্গীকার করেছেন তিনি। তরুণসহ সব বয়সী ভোটারের মধ্যে বেশ সাড়াও পেয়েছেন। তার প্রতিফলন দেখা গেছে ভোটকেন্দ্রে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মামদানিকে ‘কমিউনিস্ট’ আখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি জয়ী হলে শহরের জন্য বরাদ্দ অর্থ আটকে রাখবেন। নির্বাচনের আগের রাতে তিনি রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে এড়িয়ে কুয়োমোকে সমর্থন দেন।
মামদানি এখনো সরাসরি সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেননি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আংশিকভাবে তার জয় স্বীকার করেছেন।
নিজেকে ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে পরিচয় দেওয়া মামদানি এক্সে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। ভিডিওতে দেখা যায় একটি সাবওয়ে ট্রেনের দরজা খোলা হচ্ছে, আর ঘোষক বলছেন, পরবর্তী এবং শেষ স্টেশন হলো সিটি হল।
মামদানির ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান নির্বাচনজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। তার মুসলিম পরিচয় ও ইসরায়েলবিরোধী অবস্থান নিয়ে বিরূপ প্রচারণা চললেও শেষ পর্যন্ত ভোটাররা তাকেই সমর্থন দেন।
গত মাসের শেষদিকে এক আবেগপূর্ণ ভাষণে মামদানি বলেন, তিনি নিজের মুসলিম পরিচয় নিয়ে ‘বর্ণবাদী ও ভিত্তিহীন’ আক্রমণের মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘তারা এই নির্বাচনকে বানাতে চেয়েছে আমার ধর্মবিশ্বাসের ওপর গণভোট, কিন্তু আমি লড়েছি নিউইয়র্কবাসীর জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের বিরুদ্ধে।’
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com