weather ২৬.৯৯ o সে. আদ্রতা ৮৯% , রবিবার, ১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৈরি আবহাওয়ায় বাজারে ক্রেতা কম

মুরগির মাংস-সবজিতে স্বস্তি, গরুর মাংস-মাছে অস্বস্তি

প্রকাশ : ৩০-০৫-২০২৫ ১৩:৩৭

ছবি : সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক
থেমে থেমে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) সকাল থেকেও কোথাও ঝিরিঝিরি কোথাও জোরে বৃষ্টি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। তবে সরবরাহে খুব একটা হেরফের হয়নি। প্রায় সব পণ্য বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।

খুচরা বাজারে মাংসের তালিকায় এখন একমাত্র স্বস্তির নাম ব্রয়লার মুরগি। যেখানে গরুর মাংসের দাম ৭৫০-৮০০ টাকা আর খাসির মাংস এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেখানে ব্রয়লার পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১৬০-১৭০ টাকায়। এদিকে কিছু মাছের দামও অনেকটা ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অনেকেই এখন বাধ্য হয়ে মুরগির মাংসকেই প্রথম পছন্দ হিসেবে নিচ্ছেন। তবে বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের আগ মুহূর্তে মুরগির দামও কিছুটা বাড়তে পারে।

শুক্রবার (৩০ মে) রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রতিটি বাজারে ক্রেতার সংখ্যা ছিল কম। আবার বাজারে অনেক দোকান বন্ধ দেখা গেছে।

সবজি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, রাতে বৃষ্টি না থাকায় পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ ছিল। যে কারণে পণ্য আনা-নেওয়াতে খুব বেশি সমস্যা হয়নি। তবে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সবজি আসছে কম। বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় দামে খুব একটা প্রভাব পড়ছে না।

দেখা গেছে, বাজারে বেশিভাগ সবজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পটল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙা ও ঝিঙা আছে এই তালিকায়। এ ছাড়া কাকরোল, বরবটি, কচুর লতি, উস্তা, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। এ ছাড়া কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে শীতকালীন সবজি ফুলকপি ছোট ৫০ টাকা পিস, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৭০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।  

এসব বাজারে লেবুর হালি ১০ থেকে ১৫ টাকা, ধনেপাতা ২৮০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস, ক্যাপসিকাম ২৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা আঁটি, পালং শাক ১৫ টাকা আঁটি, কলমি শাক ২০ টাকা আঁটি, পুঁই শাক ৩০ টাকা আঁটি ও ডাটা শাক ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

এদিকে, বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম নেমেছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে। কিছু বাজারে দাম ১৮০ টাকা হাঁকলেও দরদাম করলে ওই দামে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। একইভাবে কমে সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে, বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। খাসির মাংসের দাম এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ টাকা, ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকায়। মুরগির দাম কম থাকলেও ডিমের দাম মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে। প্রতি ডজন ডিম ১৩৫-১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারেও ভোক্তারা খুব একটা স্বস্তিতে নেই। আজকের বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০–৩৫০ টাকায়, কাতল ৩৫০–৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০–৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০–৮০০ টাকা, টেংরা ৬০০–৭০০ টাকা, শিং ৪০০–৪৫০ টাকা, কৈ ২৫০–২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০–২২০ টাকা ও পাঙাশ ১৮০–২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া দেশি শিং ও কৈ বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে এক হাজার ২০০ ও এক হাজার টাকায়। এদিকে, পুরোনো মিনিকেট চাল বাড়তি দামে বিক্রি হলেও কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে বাজারে নতুন আসা মিনিকেট।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পুরোনো মিনিকেট চাল যেখানে সর্বনিম্ন ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে সেখানে নতুন মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। তবে ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পুরোনো মিনিকেট চাল এখনো সর্বোচ্চ ৮৫-৮৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে। অন্যদিকে, মুদি বাজারে তেল, চিনি, ডালের দামে খুব একটা পার্থক্য দেখা যায়নি।

যাত্রাবাড়ীর পাইকারি ব্যবসায়ী কবিরুল ইসলাম বলেন, নিম্নচাপের কারণে খুলনা, বরিশাল ও যশোর অঞ্চল থেকে সবজির ট্রাক আসতে দেরি হচ্ছে। অনেকে আসতেই পারছে না। ট্রাকগুলো কাঁদা ও পানিতে আটকে যাচ্ছে, রাস্তাও অনেক জায়গায় খারাপ। ফলে সরবরাহ কম। 

মগবাজারে আবু হোসেন নামে এক সবজি বিক্রেতা বলেন, বৃহস্পতিবার বৃষ্টির কারণে সারাদিন বেচা-বিক্রি হয়নি। শুক্রবার সকাল থেকে একই অবস্থা। পুরোনো সবজি রয়ে গেছে। এর মধ্যে কিছু সবজি এনেছি আজ। দাম আগের মতোই আছে। খিলগাঁও বাজারে মুরগি বিক্রেতা বজলু মিয়া বলেন, বাজারে সস্তা দামে মুরগি দুই সপ্তাহ ধরে বিক্রি হচ্ছে। এখন মুরগি বিক্রি করে খামারিদের লোকসান হচ্ছে।

মালিবাগ বাজারের পাইকারি ডিম বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, বর্ষার এই সিজনে অন্যান্য বছর ডিমের দাম আরো বেশি থাকে। সে হিসাবে এ বছর দীর্ঘদিন ধরে ডিমের দাম কম। সেগুনবাগিচা বাজারের চাল বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, নতুন চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে। এখন প্রতিবস্তা মিনিকেটের দাম দুই হাজার টাকার মধ্যে এসেছে; যা আগে দুই হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। তিনি বলেন, বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দামই কমেছে। তবে পুরোনো কোনো চালের দাম এখনো কমেনি।

রামপুরা বাজারে শিরিন আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, ছেলেমেয়েরা গরুর মাংস চায়, কিন্তু এটি এখন আর সামর্থ্যের মধ্যে নেই। মুরগির দামই একমাত্র সহনীয়। একই বাজারের আরেক ক্রেতা নুরুল আমিন বলেন, রুই-কাতলসহ ছোট মাছগুলোর দিকে তাকানোরও উপায় নেই। এক কেজি চিংড়ির দামে তিনদিন চলার মতো বাজার হয়। মাছ কিনতে আসলে পাঙ্গাশ-তেলাপিয়া ছাড়া আর কিছুই কেনার অবস্থা থাকে না।

কারওয়ান বাজারে মুরগির বিক্রেতা জহিরুল ইসলাম জানান, ব্রয়লারের চাহিদা এখন সবচেয়ে বেশি। অনেকে বেশি করে কিনে ফ্রিজে রেখে দিচ্ছেন। তবে ঈদের আগে দাম একটু বাড়বে নিশ্চিত।

একই বাজারে মাংস বিক্রেতা হাসান আলী বলেন, আমরা কম দামে কিনলে কমেই বিক্রি করতাম। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ে বলেই আমরা পারি না। এখন সব নির্ভর করে হাটে কীভাবে দাম ওঠানামা করছে।

পিপলসনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --


CONTACT

ads@peoplenewsbd.com

নতুন ডিজাইনের তিন নোট বাজারে আসছে আজ নতুন ডিজাইনের তিন নোট বাজারে আসছে আজ নাইজেরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা, ২১ অ্যাথলেট নিহত নাইজেরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা, ২১ অ্যাথলেট নিহত শেষ হলো হজ ফ্লাইট, সৌদি আরব পৌঁছেছেন ৮৫১৬৪ হজযাত্রী শেষ হলো হজ ফ্লাইট, সৌদি আরব পৌঁছেছেন ৮৫১৬৪ হজযাত্রী ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন চায় ৩৪ দল ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন চায় ৩৪ দল জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে ইসিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে ইসিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ