যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ জারি
প্রকাশ : ১১-০৬-২০২৫ ১১:৪৭

ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ জারি করা হয়েছে। শহরটির মেয়র কারেন ব্যাস কারফিউ জারির এই ঘোষণা দিয়েছেন।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী কঠোর অভিযানের প্রতিবাদে লস অ্যাঞ্জেলেসে চলমান বিক্ষোভের মধ্যে শহরের কেন্দ্রীয় একটি অংশে কারফিউ ঘোষণা করেন মেয়র কারেন ব্যাস।
বুধবার (১১ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। লস অ্যাঞ্জেলেসে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে চলা অভিযান নিয়ে মঙ্গলবার (১০ জুন) পর্যন্ত পাঁচ দিন ধরে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ, সহিংসতা ও লুটপাট চলে।
মঙ্গলবার নগরীটি থেকে প্রায় ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করার পর কেন্দ্রস্থলের আড়াই বর্গকিলোমিটার এলাকায় স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে পরদিন ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। আগামী বেশ কয়েকদিন কারফিউ বলবৎ থাকবে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের নগর সরকার মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠিয়ে বাসিন্দাদের সতর্ক করেছে। বার্তায় বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস শহর ঘোষণা করছে যে রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত একটি কারফিউ বলবৎ থাকবে। কাজে গমন বা কাজ থেকে ফিরে আসা, জরুরি চিকিৎসার নেওয়া বা দেওয়ার জন্য বের হওয়া এবং জরুরি বিভাগের কর্মীরা কারফিউ মুক্ত থাকবে।
মঙ্গলবার লস অ্যাঞ্জেলেসের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে জনতা। এদিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে কয়েকশ মার্কিন মেরিনা সেনা শহরটিতে হাজির হয়। লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দমনে ট্রাম্প নগরীটিতে ন্যাশনাল গার্ডের চার হাজার সেনাও মোতায়েন করেছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম ট্রাম্পের এসব পদক্ষেপে আপত্তি জানিয়ে এসব সেনা মোতায়েনকে অপ্রয়োজনীয়, অবৈধ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন। এক ভাষণে তিনি আমেরিকানদের ‘ট্রাম্পের মুখোমুখি দাঁড়ানোর’ আহ্বান জানিয়েছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশের প্রধান জিম ম্যাকডোনেল বলেন, টানা কয়েকদিন ধরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় জীবন ও সম্পদ সুরক্ষায় এ কারফিউ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। শনিবার থেকে শহরে অবৈধ ও বিপজ্জনক আচরণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যালিফোর্নিয়ার বিক্ষোভকারীদের ‘পেশাদার উসকানিদাতা’ ও ‘জন্তুর’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। মঙ্গলবার উত্তর ক্যারোলিনার ফোর্ট ব্র্যাগে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সামনে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় সেনারা কিছু ক্ষেত্রে করতালি ও উল্লাসে সাড়া দেন।
পেন্টাগনের বিধি অনুযায়ী, সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক নিরপেক্ষ থাকতে বলা হলেও এ ঘটনাটি সেই নীতিমালার পরিপন্থী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ফোর্ট ব্র্যাগের একজন মুখপাত্র জানান, প্রেসিডেন্টের বক্তব্য চলাকালে সেনাদের রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে নিষেধ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বেসামরিক অস্থিরতা মোকাবেলায় তিন দশকের মধ্যে এ প্রথমবারের মতো সক্রিয় সেনা (মেরিন) মোতায়েন করা হলো।
স্থানীয় নির্বাচিত কর্মকর্তারা বলেছেন, ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ অনেক ক্ষেত্রে বিক্ষোভ আরো তীব্র করেছে। মঙ্গলবার ক্যালিফোর্নিয়ার কর্মকর্তারা সান ফ্রান্সিসকোর এক ফেডারেল বিচারকের কাছে অনুরোধ জানান যাতে ন্যাশনাল গার্ড বা মেরিন সেনাদের আইনশৃঙ্খলা কাজে ব্যবহার রোধ করা যায়।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com