রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনায় পাঁচজন গ্রেপ্তার
প্রকাশ : ৩০-০৭-২০২৫ ১২:২৫

ছবি : সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
রংপুরের গঙ্গাচড়ার আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামে ধর্ম অবমাননাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ কথা জানানো হয়।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন একজন ভুক্তভোগী। মামলায় অজ্ঞাত এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পরে যৌথ অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।
আলদাদপুর গ্রামটি হিন্দু অধ্যুষিত। এটি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের সীমানা লাগোয়া। গঙ্গাচড়া থানা সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার গ্রামটির এক কিশোর ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর লেখা ও ছবি পোস্ট করেছে, এমন অভিযোগ পায় পুলিশ। পরে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আটক করে শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে থানায় আনা হয়। সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা করে পরদিন রবিবার দুপুরে ওই কিশোরকে আদালতের মাধ্যমে সম্মিলিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই কিশোরকে থানায় নেওয়ার পর তার বিচারের দাবিতে মিছিলসহ উত্তেজিত লোকজন শনিবার তার বাড়ির সামনে যায়। রাত ১০টার দিকে দ্বিতীয়বার আরেকটি মিছিল এসে কিশোরের এক স্বজনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। পরে রাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, রবিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উত্তেজিত জনতা আবারো বাড়িঘরে হামলা শুরু করলে পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। এতে পুলিশের একজন কনস্টেবল গুরুতর আহত হন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রশাসনের হিসাবে, হামলার ঘটনায় ২২টি পরিবারের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদের মধ্যে ১৯টি পরিবার পুনরায় নিজেদের বাড়িতে ফিরে এলেও তিনটি পরিবার পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে রবীন্দ্রনাথ রায় (৫৫) বাদি হয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান শুরু করে।
এদিকে এ ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে দ্রুত ঘর মেরামতের জন্য সহায়তা প্রদান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এলাকায় সেনা ও পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com