নীলফামারীতে ইপিজেডে সংঘর্ষ: খুলেছে কারখানা, কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকেরা
প্রকাশ : ০৪-০৯-২০২৫ ১২:০২

ছবি : সংগৃহীত
নীলফামারী প্রতিনিধি
দুই দিন বন্ধ থাকার পর নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) বিভিন্ন কারাখানা চালু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
ইপিজেডে এভারগ্রিন নামের একটি কারখানা বন্ধ ও ছাঁটাইয়ের জেরে গত মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এতে হাবিব ইসলাম (২১) নামের এক শ্রমিক নিহত এবং অন্তত ২৪ জন আহত হন। ওই ঘটনায় বুধবার পর্যন্ত ইপিজেডের সব কারখানা বন্ধ ছিল।
ওই ঘটনার পর বুধবার বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত শ্রমিক, কারখানা মালিক, বেপজা, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে ইপিজেডের কারখানাগুলো বৃহস্পতিবার থেকে খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন, এভারগ্রিন নামে যে কারখানাটি থেকে শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে, সেটি ছাড়া বাকি ২৬টি কারখানা খুলেছে। শ্রমিকেরা স্বতস্ফূর্তভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। এভারগ্রিনের কারাখানা আগামী শনিবার খুলবে।
মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার জানান ইপিজেডে বর্তমানে ২৭টি কারখানায় প্রায় ৩৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত। এ ছাড়া আরো ছয়টি কারখানা উৎপাদনে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় আছে।
সকালে ইপিজেড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকেরা মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল ও হেঁটে দলে দলে ইপিজেডের ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকছেন। নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছেন।
এভারগ্রিন কারখানায় সম্প্রতি ৫১ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়। এ ঘটনায় তিন দিন ধরে কারখানায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এ অবস্থায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা না দিয়ে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে ইপিজেডের প্রধান ফটকে নোটিশ টাঙিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে শ্রমিকেরা ভেতরে ঢুকতে না পেরে ইপিজেডের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে গেলে উত্তেজিত শ্রমিকেরা তাদের ওপর চড়াও হন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে শ্রমিক হাবিব ইসলাম নিহত হন। তিনি ইকু ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি নিটিং কারখানায় কর্মরত। তার বাড়ি জেলা সদরের সংগলশী ইউনিয়নের কাজীরহাট মাছিরচাক গ্রামে; বাবার নাম দুলাল হোসেন। সংঘর্ষের ঘটনায় বেপজার পক্ষ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি হয়েছে।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আর সাঈদ বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। কারখানার শ্রমিকেরা আজ স্বতস্ফূর্তভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। শ্রমিক নিহতের ঘটনায় মামলা করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com