আল আই-আইয়ালা বা চুল ওড়ানো নৃত্য সম্পর্কে কতটা জানেন
প্রকাশ : ১৮-০৫-২০২৫ ১১:৫৫

ছবি : সংগৃহীত
বিনোদন ডেস্ক
সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘিরে এক ব্যতিক্রমী দৃশ্যের অবতারণা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হচ্ছে দুই পাশে সারিবদ্ধ নারীদের চুল ওড়ানো নাচের মাধ্যমে।
এই অনন্য নৃত্যদৃশ্য অনেককেই বিস্মিত করেছে, কেউ কেউ আবার সমালোচনাও করেছেন। তবে সমালোচনা বা মন্তব্যের আগে জানা দরকার, এই নৃত্য শুধুমাত্র প্রদর্শনের জন্য নয়, বরং এটি একটি প্রাচীন আরব ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে।
২০১৪ সালে ইউনেসকো একটি নয় মিনিটের প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশ করে, যেখানে দেখা যায়— এই নাচ, যার নাম আল আই-আইয়ালা; মূলত সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শুধুমাত্র বিনোদন নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, যা বিয়ের অনুষ্ঠান, জাতীয় দিবস কিংবা যেকোনো বড় আয়োজনকে ঘিরে পরিবেশিত হয়।
আদিতে এই নাচে অংশ নিতেন শুধুমাত্র পুরুষরা। তারা দুটি সারিতে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে হাতে রাখতেন বাঁশের তৈরি ছোট লাঠি। গান ও কবিতার তালে তালে তারা লাঠি ওঠানামা করতেন নিখুঁত ছন্দে। মাঝখানে বাজতো ঢোল, যা পুরো পরিবেশনায় ছন্দ দিত। এই রূপে কোনো চুল ওড়ানোর অনুষঙ্গ ছিল না।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ঐতিহ্যে যুক্ত হয় নারীর অংশগ্রহণ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এখন এই নাচে অংশ নেন রঙিন পোশাকে সজ্জিত নারীরা, যারা চুল এক পাশ থেকে অন্য পাশে ছুঁড়ে ছুঁড়ে বিশেষ ভঙ্গিতে নাচ পরিবেশন করেন। একেই বলা হয় ‘চুল ওড়ানো নাচ’, যা আজ ‘আল আই-আইয়ালা’ নাচেরই নারীবাহী রূপ।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই নাচ মূলত বেদুইন সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত। এটি নারীদের পক্ষ থেকে পুরুষদের দেওয়া সুরক্ষা, সাহস এবং আস্থার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের একটি উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়। নাচে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন বয়স ও জাতির হতে পারেন। মূল নৃত্যশিল্পী উত্তরাধিকারসূত্রে এই দায়িত্ব পান এবং নতুনদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার গুরুদায়িত্বও থাকে তার কাঁধে।
এই ঐতিহ্য শুধু সংযুক্ত আরব আমিরাতে সীমাবদ্ধ নয়— কাতার, সৌদি আরব এবং বাহরাইনের মতো দেশেও শতাব্দী ধরে এই ‘আল আই-আইয়ালা’ নিয়মিত আয়োজিত হয়ে আসছে।
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com