রাজেশ খান্নার নায়িকা পরিবারসহ খুন হন
প্রকাশ : ০৩-০৯-২০২৫ ১৬:৩৪

ছবি : সংগৃহীত
বিনোদন ডেস্ক
বলিউডের প্রথম সুপারস্টার রাজেশ খান্না। ক্যারিয়ারের শেষ দিকে তিনি অভিনয় করেছিলেন কিছু বি-গ্রেড সিনেমায়। এর মধ্যে ছিল ২০০৮ সালের ছবি ‘ওয়াফা : আ ডেডলি লাভ স্টোরি’। ছবিটিতে সহ-অভিনেতা হিসেবে ছিলেন টিনু আনন্দ ও সুদেশ বেরি। আর নায়িকা ছিলেন এক তরুণী অভিনেত্রী— লায়লা খান। সিনেমাটি তেমন সাড়া ফেলেনি, কিন্তু ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে এক মর্মান্তিক ঘটনার কারণে।
২০১১ সালে লায়লা ও তার পরিবারের পাঁচ সদস্য হঠাৎ উধাও হয়ে যান। পরে জানা যায়, তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করে দেহ পুঁতে রাখা হয়েছিল। কাজটা করেছিলেন পরিবারেরই এক সদস্য। সম্প্রতি অপরাধবিষয়ক লেখক হুসেন জায়দির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের সাবেক কর্মকর্তা অম্বাদাস পোটে এই শিহরণ জাগানো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।
লায়লার মা সেলিনা তৃতীয়বার বিয়ে করেছিলেন পারভেজ তাককে। ধর্মপ্রাণ পারভেজ লায়লার অভিনয়ে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছিলেন না। শুধু তাই নয়, লায়লার ব্যবহার নিয়েও তার ক্ষোভ ছিল। সম্পত্তি নিয়ে টানাপোড়ন ও লায়লাকে দুবাই পাঠানোর পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ায় শেষমেশ তিনি হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে পরিবারের ইগাতপুরী ফার্ম হাউসে নিজের সহযোগীকে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেন। সেখানেই তৈরি হয় হত্যার মঞ্চ। একপর্যায়ে সবাইকে বেড়ানোর অজুহাতে ফার্ম হাউসে নিয়ে যান তাক।
সন্ধ্যায় বারবিকিউ আর নাচগান শেষে পরিবারের সদস্যরা নিজ নিজ কক্ষে চলে গেলে তাক ও তার সহযোগী লোহার রড ও ছুরি দিয়ে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। লায়লার ভাই ইমরান আহত হয়েও প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পারভেজ সবাইকে খুন করেন। ছয়টি লাশ পুঁতে রাখা হয় ফার্ম হাউসের একটি অসমাপ্ত সুইমিংপুলের গর্তে। প্রথমে তিনজনের দেহ ফেলে দেওয়া হয়, পরে অন্য তিনজন। দেহগুলো গদিঘর ও বালিশ দিয়ে ঢেকে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
১৭ মাস পর বৃষ্টিতে মাটি দেবে গেলে পুলিশের সন্দেহ জাগে। দীর্ঘ খননের পর কঙ্কাল উদ্ধার হয়। পরে একে একে সবার লাশ শনাক্ত করা হয়।
পুলিশি তল্লাশিতে পারভেজ তাকের আধার কার্ড পাওয়া যায়। পরে মুম্বাই ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের যৌথ অভিযানে তাককে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি স্বীকারোক্তি দেন। তবে তার সহযোগীকে আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
২০২৪ সালে এক দশকের বেশি সময় পর মুম্বাই সেশনস আদালত পারভেজ তাককে মৃত্যুদণ্ড দেন। আদালত রায়ে বলেন, এটি ছিল সম্পূর্ণ বর্বরোচিত কাজ, যা সমাজের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছিল। অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। এমনভাবে প্রমাণ লুকানো হয়েছে, যা দীর্ঘদিন অজানা থেকে গেছে।
সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা অম্বাদাস পোটের ভাষায়, ‘পারভেজ তাক ছিলেন ধুরন্ধর ও বিপজ্জনক অপরাধী। তবে শেষ পর্যন্ত আইনের হাত এড়িয়ে যাওয়া যায় না।’
পিপলসনিউজ/আরইউ
-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
ads@peoplenewsbd.com