weather ২৫.৯৯ o সে. আদ্রতা ৫০% , মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিপন্ন গোটালী মাছের সফল কৃত্রিম প্রজনন-পোনা উৎপাদন

প্রকাশ : ২৭-০৫-২০২৫ ১২:২০

ছবি : সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক
এক সময় ভোজনরসিকদের প্রিয় ছিল ‘গোটালী’ মাছ। নানা কারণে প্রায় বিলুপ্তির পথে চলে যাওয়া সুস্বাদু এই দেশি মাছটিকে এবার বৈজ্ঞানিকদের গবেষণায় নতুন জীবন দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) সৈয়দপুরে অবস্থিত স্বাদু পানি উপকেন্দ্রের গবেষণায় গোটালী মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন পদ্ধতি সফলভাবে উদ্ভাবন করা হয়েছে।

গোটালী মাছটিকে ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার’ (আইইউসিএন) বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে ঘোষণা করে। মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Crossocheilus latius এবং এটি সাইপ্রিনিডে (Cyprinidae) পরিবারের অন্তর্ভুক্ত।

বিএফআরআই-এর প্রিন্সিপাল বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আজহার আলী বলেন, গোটালী মাছের প্রাকৃতিক আবাস ধ্বংস, জলাশয় দূষণ, অবৈধ কারেন্ট ও বৈদ্যুতিক জাল ব্যবহারের ফলে এটি ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবও এর সংখ্যা হ্রাসে বড় ভূমিকা রেখেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ২৬১ প্রজাতির দেশি মাছের মধ্যে ৬৪ প্রজাতি বিপন্ন বা সংকটাপন্ন হিসেবে চিহ্নিত।

২০২৩ সাল থেকে শুরু হওয়া গবেষণায় তিস্তা ও বুড়ী তিস্তা নদী থেকে পাঁচ থেকে ছয় গ্রাম ওজনের কিছু নমুনা সংগ্রহ করে সৈয়দপুর কেন্দ্রের গবেষণা পুকুরে সংরক্ষণ করা হয়। এক বছর ধরে মাছগুলোকে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য পর্যবেক্ষণ করা হয়।

জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সোনিয়া শারমিন জানান, এরপর বয়ঃপ্রাপ্ত মাছগুলোর ওপর প্রজনন সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য প্রাকৃতিক ও সিনথেটিক হরমোন প্রয়োগ করা হয়। বর্ষাকালের (জুলাই-আগস্ট) প্রজনন মৌসুমে কংক্রিট ট্যাংকে রেখে ইনজেকশনের মাধ্যমে ডিম ছাড়ানো হয়, যেখান থেকে সফলভাবে পোনা উৎপন্ন হয়। ডিম ফুটে বের হওয়া পোনাগুলোকে প্রাথমিকভাবে ডিমের কুসুম ও উষ্ণ পানি খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়। পরে সেগুলো নার্সারিতে স্থানান্তরিত করে দুই মাস লালন করা হয়।

চূড়ান্তভাবে প্রায় ৬৫-৭০ শতাংশ পোনা বেঁচে থাকে, যা ভবিষ্যতে বড় পরিসরে ছড়িয়ে দিয়ে বাণিজ্যিক উৎপাদনের উপযোগী করা যাবে। গবেষণার নেতৃত্ব দেন ড. আজহার আলী। তার সঙ্গে ছিলেন ড. সোনিয়া শারমিন, মালিহা হোসেন মৌ, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শ্রীবাস কুমার সাহা ও মো. আবু নাসের।

ড. আজহার বলেন, কৃত্রিমভাবে প্রজননকৃত গোটালী মাছের পোনা আমরা নির্দিষ্ট সময়ের পর সারা দেশে ছড়িয়ে দেবো, যাতে সরকারি ও বেসরকারি হ্যাচারিগুলো তা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করতে পারে।

উল্লেখ্য, এর আগেও ২০১৭ সালে বিপন্ন প্রজাতির নেটিভ ট্যাংরা মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদনের জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল বিএফআরআই সৈয়দপুর কেন্দ্র। গোটালী মাছ স্থানীয়ভাবে ‘টাটকিনি’ বা ‘কালা বাটা’ নামেও পরিচিত। একসময় এটি উত্তরাঞ্চলের তিস্তা অববাহিকা ছাড়াও ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা ও সিলেট অঞ্চলের পাহাড়ি নদী ও ঝরনাতে সহজেই পাওয়া যেত। মাথা চ্যাপ্টা ও নিম্নাংশ সরু এই মাছের দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ১০ দশমিক দুই সেন্টিমিটার এবং ওজন গড়ে ১৫ থেকে ১৭ গ্রাম।

পিপলসনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --


CONTACT

ads@peoplenewsbd.com

পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন: পুলিশ পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন: পুলিশ ঢাকার দুই স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঢাকার দুই স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ কপ-৩০ সম্মেলন শুরু আজ : দুটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজবেন জলবায়ুকর্মীরা কপ-৩০ সম্মেলন শুরু আজ : দুটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজবেন জলবায়ুকর্মীরা মুন্সীগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষে গুলিতে যুবক নিহত, আহত এক মুন্সীগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষে গুলিতে যুবক নিহত, আহত এক গোপালগঞ্জে ট্রাকের পেছনে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, নিহত ২ গোপালগঞ্জে ট্রাকের পেছনে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, নিহত ২