weather ২৬.৯৯ o সে. আদ্রতা ৮৯% , বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সচিবালয় কর্মচারিদের কর্মসূচি এক দিনের জন্য স্থগিত

প্রকাশ : ২৮-০৫-২০২৫ ০০:৩১

ছবি : সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল করার বিষয়ে কর্মচারীদের দাবি বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে তুলে ধরবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবেরা। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলন কর্মসূচি বুধবার এক দিনের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার দুপুরের পর সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদসহ কয়েকজন সচিবের সঙ্গে আন্দোলনকারী কর্মচারী নেতারা বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে ভূমিসচিব সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তিনিসহ কয়েকজন সচিবকে মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব দায়িত্ব দেন। সে অনুযায়ী তারা আন্দোলনকারীদের কথা শুনেছেন। তাদের কথা বুধবার সকাল ১০টায় মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে তারা জানাবেন। এ অবস্থায় কর্মচারীরা বুধবার কোনো কর্মসূচি করবেন না।

আন্দোলনকারীদের একজন নেতা বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ও সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মুহা. নুরুল ইসলাম এ সময় জানান, তারা বুধবার কোনো কর্মসূচি পালন করবেন না। এ সময় আন্দোলনকারী নেতাদের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন বাদিউল কবির, নজরুল ইসলাম।

এদিকে টানা চতুর্থদিনের মতো মঙ্গলবারও কর্মচারিরা সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। কর্মচারীদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সচিবালয়ে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। সচিবালয়ের প্রধান ফটকে বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াট মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া বিজিবি, র‌্যাবও মোতায়েন করা হয়। সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া কেউ ঢুকতে পারেননি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যেই বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা। বেলা একটা পর্যন্ত সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কর্মচারীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর বেলা একটার পর সাংবাদিকদের সচিবালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত ছিল যে, বিএনপি সমর্থিত ‘বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের’ সভাপতি এ বি এম আব্দুস সাত্তার গাড়িতে করে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে গেলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে ফিরিয়ে দেন। পরে তিনি অভিযোগ করেন, সরকার ফ্যাসিবাদের দিকে যাচ্ছে। এই কালো আইন এমনকি শেখ হাসিনার আমলেও ছিল না।

অন্যদিকে, সচিবালয়ের বিপরীত পাশে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে সোমবার মধ্যরাত থেকে অবস্থান নিয়েছে ‘জুলাই মঞ্চ’ নামক একটি সংগঠন। তারা ৪৪ জন শীর্ষ আমলার ছবি ও নাম প্রকাশ করে তাদের অপসারণের দাবি জানায়। সংগঠনটির আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম তালুকদার ও মুখপাত্র সাকিব হোসাইন সরকারের কাছে ‘ফ্যাসিবাদী আমলাতন্ত্র উৎখাতের’ রোডম্যাপ দাবি করেন। পুলিশ ও তাদের মধ্যে এক পর্যায়ে উত্তেজনা দেখা দিলে সিদ্ধান্ত হয়, তারা মাইক ব্যবহার না করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন হয়। এর পর থেকে এই অধ্যাদেশের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা।

আন্দোলনের মধ্যেই গত রবিবার সন্ধ্যায় সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করে সরকার। এই অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে গতকালসহ টানা চার দিন সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। নিজেদের দপ্তর ছেড়ে বিপুলসংখ্যক কর্মচারী এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।

নতুন ধারায় একজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে দুই দফায় সাত দিন করে নোটিসের পর দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা রাখার বিধান রাখা হয়েছে।

অধ্যাদেশে ‘আচরণ বা দণ্ড সংক্রান্ত’ বিশেষ বিধানে বলা হয়েছে-

কেউ যদি এমন কাজ করে যা অনানুগত্যের সামিল এবং যা অন্য কর্মচারীদের মাঝে অনানুগত্য সৃষ্টি করতে পারে বা শৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটাতে পারে বা অন্যের কর্তব্য পালনে বাধার সৃষ্টি করতে পারে; এককভাবে বা সম্মিলিতভাবে ছুটি ব্যতীত কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে। কাউকে কর্মবিরতিতে বাধ্য বা উস্কানি দেওয়া, অন্য কর্মচারীকে কাজে বাধা দেওয়া হলে; কোনো কর্মচারীকে তার কর্মস্থলে আসতে বা কাজ করতে বাধা দেওয়া হলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হবে।

এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে পদাবনতি বা গ্রেড অবনতি, চাকরি থেকে অপসারণ কিংবা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।

এসব অসদাচরণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গঠন, সাত দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারণ জানিয়ে জবাব না দিলে আবার সাত দিনের নোটিস দেওয়ার পর তা বিবেচনা করে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে।

তবে অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর আপিল রাখার সুযোগ রয়েছে। দণ্ডের নোটিস হাতে পাওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করা যাবে।

নতুন এই অধ্যাদেশকে আন্দোলনকারীরা বলছেন ‘নিবর্তনমূলক কালো আইন’। এ আইন করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সরকার প্রয়োজন মনে করছে বলেই এ আইন করছে।

কর্মচারীদের নেতা মোজাহিদুল ইসলাম বলেছিলেন, জনপ্রশাসন সচিব তাদেরকে অন্ধকারে রেখে নিজে আইন মন্ত্রণালয়ে বসে এমন অধ্যাদেশ প্রস্তুত করেছেন। কয়েকজন উপদেষ্টা আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত তারা অধ্যাদেশ জারি করেই ছেড়েছেন, কথা রাখেননি।

পিপলসনিউজ/আরইউ

-- বিজ্ঞাপন --


CONTACT

ads@peoplenewsbd.com

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের গর্বিত অংশীদার ‘বাংলাদেশ পুলিশ’ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের গর্বিত অংশীদার ‘বাংলাদেশ পুলিশ’ অনলাইনে ইলিশ বিক্রির নামে অভিনব প্রতারণা, চক্রের ৮ সদস্য আটক অনলাইনে ইলিশ বিক্রির নামে অভিনব প্রতারণা, চক্রের ৮ সদস্য আটক সিলেট-সুনামগঞ্জ সীমান্তে ৮২ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ সিলেট-সুনামগঞ্জ সীমান্তে ৮২ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ আন্দোলনে অবরুদ্ধ নগরভবন, থমকে আছে সেবা আন্দোলনে অবরুদ্ধ নগরভবন, থমকে আছে সেবা চারদিনের সফরে জাপান পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা চারদিনের সফরে জাপান পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা